রাজিব আহমেদ (রাজু) ফরিদপুরঃ
ফরিদপুর — কোতয়ালি থানার কানাইপুর ইউনিয়নের ভেলাবাস গ্রামে স্থানীয়দের অভিযোগ, মোঃ আলামিন শেখ নামের এক ব্যবসায়ী নিষিদ্ধ থাকা সত্ত্বেও পলিথিন ব্যবসা পরিচালনা করছেন। স্থানীয়রা বলেন, তিনি ফরিদপুর শহর থেকে শুরু করে কানাইপুর, তাম্বুলখানা — চুঙ্গির মোড়ে ও আশপাশের বিভিন্ন হাটবাজারে পলিথিন সরবরাহ করে থাকেন।এবং তিনি বিপুল পরিমান পলিথিন তার গুদামে মজুদ রাখেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, প্রশাসনের তদারকি না থাকায় বাজারে এখন সহজলভ্য হয়ে পড়েছে নিষিদ্ধ ঘোষিত এই পলিথিন ব্যাগ। প্রতিদিনই হাট-বাজারে, দোকানে, এমনকি ঘরে ঘরে ব্যবহৃত হচ্ছে পলিথিন। এতে পরিবেশের ক্ষতির পাশাপাশি জনস্বাস্থ্যের ওপর পড়ছে মারাত্মক প্রভাব।
জনগণের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বেশিরভাগ মানুষ পলিথিনের ক্ষতি সম্পর্কে জানলেও বিকল্প না থাকায় সেটিই ব্যবহার করছেন। একজন ক্রেতা বলেন, “দোকানদার যা দেয় আমরা তাই নেই, না দিলে তো আমরা নিতাম না।”
অভিযুক্ত ব্যবসায়ী মোঃ আলামিন শেখ বলেন, “আমি তো মদ বা গাঁজা বিক্রি করছি না। পলিথিন যদি অবৈধ হয় তাহলে সরকার কেন উৎপাদন বন্ধ করছে না? উৎপাদন যদি হয়, বিক্রিও হবে। এখনো পর্যন্ত প্রশাসন কেউ এসে কিছু বলেনি বা জরিমানা করেনি।তাঁর এই প্রতিক্রিয়া স্থানীয়দের মধ্যে বিতর্ক তৈরি করেছে।
পরিবেশবিদরা বলছেন, পলিথিন মাটির উর্বরতা কমিয়ে দেয়, খাল-বিল ও নদী নষ্ট করে এবং বায়ুদূষণের মাধ্যমে স্বাস্থ্যের জন্য ভয়াবহ হুমকি সৃষ্টি করে। তারা মনে করেন, প্রশাসনের নিয়মিত অভিযান ও জনসচেতনতা ছাড়া এ সমস্যা সমাধান সম্ভব নয়।
২০০২ সালে বাংলাদেশ বিশ্বে প্রথম দেশ হিসেবে পলিথিন নিষিদ্ধ করে আইন পাস করেছিল। শুরুর দিকে অভিযান জোরদার থাকলেও বর্তমানে তদারকির অভাবে আবারও তা ফিরে এসেছে বাজারে।
কানাইপুরের কয়েকজন ব্যবসায়ী ও ক্রেতা প্রশাসনের কার্যকরী তদারকির অভাবকে দায়ী করেছেন। “প্রশাসন হাত গুটিয়ে বসে রয় — মাস শেষে বেতন নিয়ে চলে যায় এমন ধারণাই তৈরি হয়েছে,”— একটি রাজনৈতিক ও সামাজিক কথা এলাকাবাসীর মুখে শোনা যায়। তবে এই মন্তব্যগুলো স্থানীয় রাজনৈতিক ও সামাজিক মতামতের প্রতিফলন মাত্র — আদালত বা প্রশাসনিক আদেশ ব্যতীত কাউকে দোষী ধরা যাবে না।
স্থানীয় সচেতন মহল প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেছে, “আইন শুধু কাগজে নয়, বাস্তবায়নেও দেখতে চাই। যারা পলিথিন ব্যবসা করছে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে।”
ফরিদপুরের সাধারণ মানুষ আশা করছে, দ্রুত প্রশাসন কার্যকর উদ্যোগ নেবে এবং পরিবেশ রক্ষায় নিষিদ্ধ পলিথিনের ব্যবহার বন্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।
