ফরিদপুর প্রতিনিধিঃ
ফরিদপুরের মধুখালীতে যৌতুকের জন্য স্ত্রীকে শ্বাসরোধে হত্যার দায়ে নুর আলম ওরফে হুমায়ুন (৩৪) নামের এক স্বামীকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। রায়ের অংশ হিসেবে তাকে এক লাখ টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও তিন বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও দেওয়া হয়েছে।
বুধবার (৭ মে) দুপুরে ফরিদপুর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক শামীমা পারভীন এ রায় ঘোষণা করেন। রায় ঘোষণার সময় আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন। সাজাপ্রাপ্ত নুর আলম মধুখালী উপজেলার গোপালদী গ্রামের মো. শহীদ শেখের ছেলে। নিহত নারী ছিলেন মধুখালীর দয়ারামপুর গ্রামের কুতুব উদ্দিন মোল্লার মেয়ে। মামলার এজাহারে জানা যায়, ২০১৮ সালের ২৩ অক্টোবর রাত পৌনে ১টার দিকে যৌতুকের জন্য স্ত্রীকে শ্বাসরোধে হত্যা করেন হুমায়ুন। হত্যার পর বিষপান করে আত্মহত্যা করেছে বলে প্রচার চালায় স্বামীর পরিবার। পরদিন ভোরে প্রতিবেশীদের মাধ্যমে নিহতের পরিবার খবর পায়। তারা ঘটনাস্থলে গিয়ে বাড়িতে কাউকে না পেয়ে পুলিশকে জানায়। পরে পুলিশ গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়।
এরপর নিহতের বাবা কুতুব উদ্দিন মোল্লা ২৫ অক্টোবর মধুখালী থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। ফরিদপুর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট গোলাম রব্বানী ভূঁইয়া রতন জানান, মামলাটিতে ১২ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়। প্রত্যেক সাক্ষীর জবানবন্দি এবং উপস্থাপিত আলামতে আসামির অপরাধ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় আদালত এ রায় প্রদান করেন।
স্থানীয় এলাকাবাসী ও নারী অধিকার সংগঠনগুলোর মতে, এই রায় পারিবারিক সহিংসতা এবং যৌতুকের বিরুদ্ধে একটি গুরুত্বপূর্ণ বার্তা দিয়েছে। তারা দ্রুত ও নিরপেক্ষ বিচার নিশ্চিত করায় বিচার বিভাগের প্রশংসা করেছেন।