মিঠুন পাল,পটুয়াখালীঃ

পটুয়াখালীর গলাচিপায় বিদ্যালয়ের খেলার মাঠে সড়ক নির্মাণের বালু রাখার জন্য রাতের আঁধারে মাটি খনন করেছে ঠিকাদার। এতে ক্ষোভে ফুঁসছে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা। তীব্র প্রতিবাদের মুখে বাধ্য হয়ে খনন কাজ বন্ধ করেন সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার। তবে মাটি খননের বিষয়ে জানেন না প্রধান শিক্ষক,নেয়া হয়নি কোন অনুমতি। রোববার (২ ফেব্রুয়ারি) উপজেলার রতনদী তালতলী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের মাঠে এ ঘটনা ঘটে।

জানা যায়, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) গলাচিপা-বন্যাতলী সড়কের কার্পেটিং কাজ বাস্তবায়ন করছে। এ কাজের কার্যাদেশ পেয়েছে চট্টগ্রামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ইউনুস এন্ড ব্রাদার্স। যার অধীনে পটুয়াখালীর ঠিকাদার ফিরোজ আহম্মেদ কাজটি বাস্তবায়ন করছেন। বর্তমানে রাস্তাটির বালু ভরাটের কাজ চলছিল। রোববার সকালে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা দেখতে পায়, স্ক্যাভেটর দিয়ে খেলার মাঠ খনন করা হচ্ছে। এ দৃশ্য দেখে তারা ক্ষোভে ফেটে পড়ে এবং প্রতিবাদ জানায়।

বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী ওবায়দুল ইসলাম বলেন, “সকালে স্কুলে এসে দেখি, আমাদের খেলার মাঠ স্ক্যাভেটর দিয়ে কাটা হচ্ছে। আমরা দ্রুত প্রতিবাদ করি এবং প্রধান শিক্ষককে বিষয়টি জানাই।”

অভিভাবক মোশারফ হোসেন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন,”রতনদী তালতলী মাধ্যমিক বিদ্যালয় একটি ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠান। প্রতিদিন শত শত শিক্ষার্থী এখানে খেলাধুলা করে। মাঠ কেটে নষ্ট করায় আমরা দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।”

ঠিকাদারের কাজের তদারকির দায়িত্বে থাকা আলতাফ হোসেন এ বিষয়ে বলেন,”স্ক্যাভেটর চালক ভুলক্রমে মাঠ খনন করেছে। ঠিকাদারের নির্দেশে আমরা দ্রুত মাঠ ভরাট করে দিচ্ছি।”

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. জাকির হোসেন জানান,”সকালে খবর পেয়ে বিদ্যালয়ে এসে দেখি মাঠের বিশাল অংশ কেটে ফেলা হয়েছে। বিষয়টি সঙ্গে সঙ্গে ঠিকাদারকে জানানো হলে তারা মাঠ পুনরায় ভরাট করে দিচ্ছে।”

তবে স্থানীয় ঠিকাদার ফিরোজ আহম্মেদ-এর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে সাংবাদিক পরিচয় পেয়ে তিনি ফোন কেটে দেন।

রতনদী তালতলী ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. হাফিজুর রহমান বলেন,
“এ বিদ্যালয়টি ভোটকেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত হয়। খেলার মাঠটি ছাত্রছাত্রীদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ছিল। এটি নষ্ট করায় স্থানীয়দের মাঝে ক্ষোভ বিরাজ করছে।”

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মিজানুর রহমান বলেন,”বিদ্যালয়ের মাঠ খননের বিষয়টি কে বা কারা অনুমতি দিয়েছে, তা খতিয়ে দেখা হবে। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কেন আমাকে বিষয়টি জানাননি, সেটিও তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *